দৈনিক মাতারবাড়ি সংবাদ
২১ মার্চ ২০২৫, নিজস্ব প্রতিবেদন

সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে কেন ভিলেন বানানো হচ্ছে?

রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক ও সমালোচনা দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে সেনাবাহিনী ও তার নেতৃত্বকে “ভিলেন” হিসেবে উপস্থাপনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই অবস্থার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব এবং তথ্যের অপব্যবহারকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও বিভাজনের রাজনীতি

বিশ্লেষকদের মতে, কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে সমালোচনার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। বিশেষ করে, রাজনৈতিক অস্থিরতা বা নির্বাচনী পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীকে একটি পক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে করে সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতা ও জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চলছে বলে মনে করা হয়।

সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা

সামাজিক মাধ্যমের ব্যাপক ব্যবহার ও অপব্যবহার এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ভুয়া তথ্য, গুজব এবং প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে, ফেসবুক, টুইটার এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হওয়া কন্টেন্টগুলো এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

সেনাবাহিনীর ভূমিকা ও জনগণের প্রত্যাশা

বাংলাদেশের সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়নমূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে আলোচনার জন্ম দেয়। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সংঘাতের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে তার নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বকে সম্মান করা উচিত।

সমাধানের পথ

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সঠিক তথ্য প্রচার, সামাজিক মাধ্যমের দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং রাজনৈতিক সংলাপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, সেনাবাহিনীর কাজকর্মকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এতে করে জনগণের আস্থা অটুট থাকবে এবং বিভ্রান্তি দূর হবে।

উপসংহার

সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে “ভিলেন” হিসেবে উপস্থাপনের এই প্রবণতা দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। রাজনৈতিক স্বার্থ ও গুজবের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় ঐক্য ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা এখন সময়ের দাবি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।